ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যা লাগে এবং ফি সহ সব তথ্য (আপডেটেড)
মূলত ড্রাইভিং লাইসেন্স আপনাকে গাড়িচালক পেশার বৈধতা দেয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকাই প্রমাণ করে আপনি আপনার পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। পেশাগত জীবনে আপনার যদি নিজস্ব গাড়ি থাকে বা আপনি যদি পেশাদার চালক হয়ে থাকেন, অনেক ক্ষেত্রেই ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার কারণে পুলিশি ঝামেলায় পড়তে পারেন।
এই আর্টিকেলে একদমই আপডেট তথ্যসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে বা ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সম্পূর্ণভাবে সবকিছু বলা হবে।
পাশাপাশি অনলাইনে কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করবেন এবং অনলাইন থেকে কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করবেন এবং পরবর্তীতে ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন তার পুরো প্রসেসটাই দেখানো হবে। তাই ধৈর্য্য নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
পেশাদার কিংবা অপেশাদার যেকোন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যই কিছু কাগজপত্র দরকার হবে এবং দুই ক্ষেত্রেই তা একই। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. অনলাইন আবেদন ফরম
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এখন অফিসে গিয়ে কাগজে আবেদন করার কোন নিয়ম নেই, যাস্ট অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদনটা করার পর আপনাকে একটা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন কপি দেওয়া হবে। এটা PDF আকারে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে সেভ করে নিবেন।
বাসায় যদি কোন প্রিন্টার থাকে তাহলে সাথে সাথে প্রিন্ট দিয়ে দিবেন, না থাকলে কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে লার্নার কপিটি বের করে নিবেন।
তাহলে আপনার প্রথমেই প্রয়োজন হচ্ছে আবেদন ফরম।
২. পাসপোর্ট সাইজের ছবি
দুই নম্বরে যেটা লাগবে সেটা হলো আপনার একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবিটা 300×300 pixel এর এবং 150kb এর মধ্যে হতে হবে।
৩. NID কার্ডের ফটোকপি
আপনার NID কার্ডের একটা ফটোকপি লাগবে। NID এর দুই পৃষ্ঠারই ফটোকপি লাগবে।
৪. শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি (সার্টিফিকেট)
আপনার সার্টিফিকেটের একটা ফটোকপি লাগবে। এখন কোন সার্টিফিকেটটা আপনি দিবেন। খুব ভালো হয় আপনার সর্বশেষ সার্টিফিকেটের ফটোকপিটা দিলে। যেমন আপনি সদ্য মাস্টার্স পাশ করে বের হয়েছেন। তাহলে ঐ সার্টিফিকেটের কপিটা দিবেন।
অথবা SSC, HSC এর যেকোন একটা দিলে হবে। অষ্টম শ্রেণী পাশ হলে সেটা দিলেও হবে। প্রশ্ন হলো, কারো যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকে অর্থাৎ সে যদি কোন পড়াশোনাই না করে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না। কারণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে মিনিমাম অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হবে।
৫. ইউটিলিটি বিল বা বিদ্যুৎ বিলের কপি
এবার আপনার প্রয়োজন হবে একটা বিদ্যুত বিলের কপি। মুলত আপনার বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্যই এই ইউটিলিটি বিলের কপিটা দিতে হয়। এখন আপনি যদি ভাড়া থাকেন তাহলে মালিকের কাছ থেকে একটা ইউটিলিটি বিলের কপি চেয়ে নিবেন।
তারপর আপনার যে জিনিসটা দরকার হবে সেটা একটু বেশি ইম্পোর্টেন্ট।
৬. মেডিকেল সার্টিফিকেট
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তার দ্বারা যাচাইকৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট আপনার প্রয়োজন হবে। ভাবতে পারেন এটা আবার কিসের জন্য। আপনি যদি মেডিক্যালি আনফিট থাকেন তাহলে সড়কের অনেক দূর্ঘটনার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।
এতে করে আপনার জীবন, পথচারীর জীবন, আপনার সাথের প্যাসেঞ্জারদের জীবন হুমকিতে থাকবে। যেমন আপনার যদি চোখের সমস্যা থাকে তাহলে আপনার দূর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। মূলত এসব বিষয় যাচাই করেই আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে।
এখন কথা হলো এই মেডিকেল সার্টিফিকেটটা আপনি কোথা থেকে নিবেন। কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে নিতে পারেন। অথবা রেজিস্টার্ড এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে গিয়ে যদি বলেন যে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট নিবেন তখন তারা আপনাকে যেসব পরীক্ষার দরকার হয় সেসব করিয়ে তারপর আপনাকে সার্টিফিকেটটা দিবে।
এখন এটার জন্য একটা সুনির্দিষ্ট ফরম আছে। সেটা ডাক্তার পূরণ করে দিবে। ফরমটা আপনারা যখন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন তখনো পাবেন অর্থাৎ BRTA এর ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন।
![]() |
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট ফরম্যাট |
মেডিকেল সার্টিফিকেটটা যখন ফিজিক্যালি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কাগজপত্র জমা দিতে যাবেন এটাও সাথে করে অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে। এই মেডিকেল সার্টিফিকেট যেটা পাবেন সেটা আপনাকে স্ক্যান করে PDF আকারে আপনার কম্পিউটার বা ফোনে নিয়ে যেতে হবে। এটার সাইজ হতে পারবে সর্বোচ্চ 600Kb।
আরেকটা বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করি। মেডিকেল সার্টিফিকেট যখন নিচ্ছেন তখন রক্তের গ্রুপটাও পরীক্ষা করে নিবেন। কারণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপটাও উল্লেখ করতে হয়।
এর অনেক কারণ আছে যেমন কোন কারণবশত যদি আপনি এক্সিডেন্ট করেন তখন যদি ইমার্জেন্সি রক্তের প্রয়োজন হয় আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সে উল্লেখ করা ব্লাড গ্রুপটা দেখেই আপনার জন্য ইমিডিয়েট রক্তের ব্যবস্থা করা যাবে। যদিও ব্লাড টেস্টের কপিটা জমা দিতে হয় না যাস্ট উল্লেখ করে দিলেই হলো।
আরো দেখুন: মোবাইল আর কখনো হ্যাং করবে না
৭. ডোপ টেস্ট
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আপনাকে ডোপ টেস্ট করতে হবে। ডোপ টেস্টটা শুধুমাত্র পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যই করতে হয়, অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য এটার প্রয়োজন নেই।
৮. পেমেন্ট কপি
আপনি যখন অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করবেন প্রাথমিকভাবে আপনাকে মোবাইল ব্যাংকিং যেমন বিকাশ নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে একটা পেমেন্ট করতে হবে।
পরবর্তীতে যখন আপনি BRTA এর সকল টেস্ট যেমন রিটেন, প্র্যাকটিক্যাল, ভাইভা ইত্যাদি পরীক্ষায় পাশ করে যাবেন তখন BRTA এর নির্দিষ্ট একটা ব্যাংক একাউন্টে একটা পেমেন্ট করতে হবে আপনাকে। তারপর তারা আপনাকে একটা পেমেন্ট স্লিপ দিবে। সেই রশিদটাও আপনাকে সাথে রাখতে হবে।
৯. পুলিশ ভেরিফিকেশন
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন হওয়ার পর তার একটা কপিও আপনাকে জমা দিতে হবে।
এখানে যেসমস্ত কাগজপত্রের কথা বলা হলো এর বেশি কিছু না, যাস্ট এগুলাই লাগবে। পেশাদার ও অপেশাদার দুই ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন হবে সব তুলে ধরা হয়েছে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে শুধু দুইটা বেশি কাগজ জমা দিতে হচ্ছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন ও ডোপ টেস্ট রিপোর্ট। আশা করি আপনি বুঝেছেন যে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগে।
আরো দেখুন: নতুন নিয়মে টিন সার্টিফিকেটের আবেদন এবং সকল তথ্য
এবার অনেকের কাছেই একটি খুব ভাইটাল প্রশ্ন হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি টাকা লাগে?
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে?
এই প্রশ্নটা প্রায় সবাই করে থাকে। সেটা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স হোক বা অপেশাদার। আবার অনেকেই জানতে চাইতে পারেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে।
আরো দেখুন: কম্পিউটারের উইন্ডোজ ১১ ফাস্ট করুন
বা আমি পরীক্ষায় ফেল করেছি নতুন করে যদি পরীক্ষা দিতে চাই কত টাকা লাগবে। চলুন তাহলে এই বিষয়ে ক্লিয়ার একটা আইডিয়া আপনাদের দেই।
আরো দেখুন: পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে ১২ টি বিষয় চেক করুন
চলুন প্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি'টা জেনে নিই।
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি (পেশাদার/অপেশাদার)
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ফি
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ১০ বছরের জন্য আপনাকে স্মার্ট কার্ড ইস্যু ফি দিতে হবে ৪৫৫৭ টাকা।
নবায়নের জন্য ফি
টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন?
অর্থাৎ QR code সম্বলিত যে ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনলাইন কপিটা আছে সেটার কথা বলছি। চলুন দেখা যাক কিভাবে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্সটা ডাউনলোড করবেন।
প্রথমেই আপনারা মোবাইল বা কম্পিউটারের ক্রোম ব্রাউজার বা যেকোনো ব্রাউজারে চলে আসবেন। সার্চ বারে bsp portal লিখে সার্চ করবেন। তারপর যে ওয়েব সাইটগুলো আসবে সেখান থেকে নিচের ইমেজের মতো BRTA Service Portal এর User Login এ ক্লিক করবেন।
শেষকথা
ড্রাইভিং লাইসেন্স FAQs
1. বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স কত?
অপেশাদার চালকদের জন্য ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং পেশাদার চালকদের জন্য ২০ বছর।
2. ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কীভাবে আবেদন করতে হয়?
প্রথমে বিআরটিএ ওয়েবসাইট থেকে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে সংগ্রহ করতে হয়, তারপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা দিয়ে মূল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়।
3. লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কতদিন?
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ মাস।
4. ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন?
জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, ছবি, চিকিৎসা সনদ, NID কার্ডের ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি এবং নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয়। পেশাদার লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ডোপ টেস্ট রেজাল্ট লাগবে।
5. ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি কত?
অপেশাদার শুধু মোটরসাইকেল বা শুধু প্রাইভেট কার যেকোন একটার লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনে আপনার লাগবে ৫১৮ টাকা। অপেশাদার 'মোটরসাইকেল + প্রাইভেট কার' দুইয়ের জন্যই লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে চান তাহলে আপনার লাগবে ৭৪৮ টাকা।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ১০ বছরের জন্য আপনাকে স্মার্ট কার্ড ইস্যু ফি দিতে হবে ৪৫৫৭ টাকা। আর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে আপনাকে এই ফি'টা পাঁচ বছরের জন্য দিতে হবে ২৮৩২ টাকা।
6. লাইসেন্স নবায়ন কীভাবে করা যায়?
লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বিআরটিএ অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথি ও ফি জমা দিয়ে নবায়ন করা যায়। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ১০ বছরের জন্য নবায়ন ফি ৪২১২ টাকা। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ৫ বছরের জন্য নবায়ন ফি ২৪৮৭ টাকা।
7. লাইসেন্স হারিয়ে গেলে কী করতে হবে?
ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে আরেকটি ডুপ্লিকেট বা প্রতিলিপি পেতে আপনাকে দিতে হবে ৯৯২ টাকা।
8. ড্রাইভিং পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন আসে?
লিখিত পরীক্ষায় ট্রাফিক সাইন, সড়ক নিরাপত্তা, এবং ট্রাফিক আইন সম্পর্কিত প্রশ্ন থাকে।
9. বিদেশি লাইসেন্স কি বাংলাদেশে বৈধ?
বিদেশি লাইসেন্সধারীরা ৩ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে গাড়ি চালাতে পারেন; এর পর স্থানীয় লাইসেন্স প্রয়োজন।
10. ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কতদিন?
অপেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ১০ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
11. ই-লাইসেন্স কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?
ই-লাইসেন্স হল ইলেকট্রনিক ড্রাইভিং লাইসেন্স, এটি স্মার্টফোনে PDF আকারে সেভ করতে পারবেন এবং যায় এবং 'DL Checker' অ্যাপের মাধ্যমে যাচাই করা যায়।
12. লাইসেন্সের ঠিকানা পরিবর্তন কীভাবে করা যায়?
অনলাইনে আবেদন করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন এবং এর জন্য নির্দিষ্ট ১১০৭ টাকা ফি দিতে হয়।
13. লাইসেন্সের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট কোথা থেকে নিতে হয়?
সরকার অনুমোদিত BCS চিকিৎসকের কাছ থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়।
14. ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি হওয়া বাধ্যতামূলক কি?
না, তবে প্রশিক্ষণের জন্য অনুমোদিত ড্রাইভিং স্কুল থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সুবিধাজনক।
15. লাইসেন্স পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে পুনরায় কবে পরীক্ষা দেওয়া যায়?
ব্যর্থ হলে পুনরায় আবেদন করে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে আবেদন পুনঃ পরীক্ষার জন্য আবেদন ফি ২৩০ টাকা।
16. লাইসেন্সের জন্য ফি কোথায় জমা দিতে হয়?
বিআরটিএ নির্ধারিত ব্যাংক বা অনলাইন পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যেমন বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়া যায়।
17. ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ছবি কী ধরনের হওয়া উচিত?
নির্দিষ্ট মাপের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৩০০×৩০০ পিক্সেলের এবং ১৫০ Kb এর মধ্যে হতে হবে।
18. লাইসেন্সের জন্য রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কি?
হ্যাঁ, আবেদনপত্রে রক্তের গ্রুপ উল্লেখ করতে হয়।
19. ড্রাইভিং লাইসেন্সের মৌখিক পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন করা হয়?
মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত ট্রাফিক সাইন, সড়ক নিরাপত্তা, ট্রাফিক আইন, যানবাহনের ধরন, জরুরি পরিস্থিতিতে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ক প্রশ্ন করা হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
20. লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কোথায় গাড়ি চালানো যায়?
লার্নার লাইসেন্সধারী ব্যক্তি নির্ধারিত প্রশিক্ষণ এলাকায় প্রশিক্ষকের উপস্থিতিতে ডুয়েল সিস্টেম (ডাবল স্টিয়ারিং ও ব্রেক) সম্বলিত গাড়ি চালবেন। গাড়ির সামনে ও পিছনে "খ" লেখা প্রদর্শন করতে হয় অর্থাৎ ঐভাবে চালাতে হয়।
21. ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কী শাস্তি হতে পারে?
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে সর্বোচ্চ ৪ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। এই ক্ষেত্রে গাড়ির মালিক ও চালক উভয়েই দণ্ডিত হতে পারেন।
22. গাড়িতে নিষিদ্ধ হর্ন বা উচ্চ হর্ণের মাইক ব্যবহার করলে কী শাস্তি হয়?
নিষিদ্ধ হর্ন ব্যবহার করলে ১০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
23. রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চালালে কী শাস্তি হতে পারে?
প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ২০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। পরবর্তীবার একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
24. মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে কী শাস্তি হতে পারে?
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। পরবর্তীবার একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।